ঢাকা,মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

ডিবির ওসিসহ ৬ কর্মকর্তা রিমান্ডে

সোয়া কোটি টাকার স্বর্ণ ছিনতাইয়ে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মাঝে মধ্যেই ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু খোদ পুলিশ সদস্যরাই এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ২০ টি স্বর্ণের বার ছিনতাই করলেন। শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি তাদের। উল্টো ধরা পড়েন ছয়জনই। উদ্ধার হয় ১৫ টি স্বর্ণের বার। বাকি পাঁচটি বারের খোঁজ চলছে। ছিনিয়ে নেয়া ২০টি স্বর্ণ বারের বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ছয় জনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে গত রোববার (৮ আগস্ট) বিকেলে ফেনীর ফতেহপুর রেলক্রসিং এলাকায়। বুধবার দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খানের আদালত ওই ৬ পুলিশ কর্মকর্তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ফেনী ডিবির পরিদর্শক (ওসি) সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাহের হোসেন, মিজানুর রহমান ও নুরুল হক এবং এএসআই অভিজিত বড়ুয়া ও মাসুদ রানা। জানা যায়, স্বর্ণের বার ছিনিয়ে নেয়ার মূল পরিকল্পনা ছিল ওসি সাইফুলের। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার (এসপি) খোন্দকার নূরুন্নবী।

এসপি বলেন, কোনো পুলিশ সদস্য যদি চাকরিতে থাকা অবস্থায় কোনো ফৌজদারি মামলার আসামি হন এবং আটক হন তাহলে চাকরিবিধি অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার কথা। পুলিশ সুপার আরও বলেন, সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত চিঠিতে স্বাক্ষর হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার চিঠি ইস্যু করা হবে। বুধবার দুপুরে ফেনী থানা থেকে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খানের আদালতে ওই ছয় আসামিকে হাজির করে পুলিশ। প্রত্যেকের ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনির হোসেন। আদালত প্রধান আসামি ডিবির ওসি সাইফুল ইসলামকে ৪ দিন ও বাকি ৫ পুলিশ কর্মকর্তাকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস নগরীর হাজারী গলিতে ব্যবসা করেন। স্বর্ণের ২০টি বার নিয়ে তিনি যাচ্ছিলেন ঢাকায়। ফেনী পৌঁছার পর হঠাৎ তার গাড়ির পথরোধ করেন গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্য। স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে থাকা ২০টি স্বর্ণের বার তারা ছিনিয়ে নেন। ছিনতাইয়ের ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস ফেনী থানায় একটি ডাকাতির মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, রোববার তাকে আটক করার পর সোনার বারগুলো ছিনিয়ে নিয়ে রাত আটটার দিকে ছেড়ে দেন ডিবি পুলিশের ওই কর্মকর্তারা। অভিযোগ পেয়ে নড়ে চড়ে বসে ফেনী জেলা পুলিশ। গত মঙ্গলবার স্বর্ণের বার ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ছয় পুলিশ কর্মকর্তাকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় স্বর্ণের ১৫টি বার। এখনও পর্যন্ত হদিস না পাওয়া বাকি পাঁচটি স্বর্ণ বার উদ্ধারে চেষ্টা চলছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, স্বর্ণ বারগুলো বৈধ না অবৈধ তাও তদন্ত করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: